নবীনগর ক্রাইম নিউজ ।
শীতকালীন ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুরা আইসিডিডিআরবির হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদের পাশে রয়েছেন অভিভাবকরা।
শীতকালীন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে আইসিডিডিআরবিতে। সঠিক চিকিৎসা না পেলে শিশুদের জীবনঝুঁকি বাড়ছে।
শীতকালে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীসহ আশপাশের এলাকার শিশুরা ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৬৭৫ শিশু আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মহাখালী হাসপাতাল ভর্তি হচ্ছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই রোটাভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। ফলে শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে এবং মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।
Table of Contents
রোগীর সংখ্যা ও কারণ
শিশুদের ঝুঁকির কারণ
অঞ্চলভিত্তিক রোগীর সংখ্যা
শিশুদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন
করণীয়
রোগীর সংখ্যা ও কারণ
আইসিডিডিআরবির তথ্য অনুযায়ী, শীতকালীন ডায়রিয়া গত বছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। রোটাভাইরাস এই ডায়রিয়ার প্রধান কারণ। শিশুরা ঘন ঘন পায়খানা করছে, যা দুধের মতো সাদা।
আইসিডিডিআরবির সহকারী বিজ্ঞানী শোহেব বিন ইসলাম জানিয়েছেন, “গত বছরের তুলনায় রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। অনেক শিশুকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।”
শিশুদের ঝুঁকির কারণ
ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতিতে ওআরএস ব্যবহার না করার কারণে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। অধিকাংশ মা সঠিকভাবে স্যালাইন তৈরি করতে পারেন না। ফলে শিশুদের রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা ‘হাইপারনেট্রিমিয়া’ নামক প্রাণঘাতী অবস্থার সৃষ্টি করে।
আইসিডিডিআরবির পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯১টি শিশুর হাইপারনেট্রিমিয়া শনাক্ত হয়েছে।
অঞ্চলভিত্তিক রোগীর সংখ্যা
ঢাকার মোহাম্মদপুর, গুলশান, কামরাঙ্গীরচর, মিরপুর এবং আশুলিয়া এলাকা থেকে সবচেয়ে বেশি রোগী আসছে। গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ থেকেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
শিশুদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন
৮৮ শতাংশ মায়ের ওআরএস সঠিকভাবে ব্যবহারের ধারণা নেই। এমনকি ২৪ শতাংশ মা মনে করেন, স্যালাইনের চেয়ে অ্যান্টিবায়োটিক বেশি কার্যকর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক নিয়মে স্যালাইন খাওয়ানো, বিশুদ্ধ পানি পান করানো এবং খাবারের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
করণীয়
শিশুদের রোটাভাইরাসজনিত ডায়রিয়া প্রতিরোধে করণীয়:
রোটাভাইরাসের টিকা দেওয়া: রোটাভাইরাসের টিকা শিশুদের ডায়রিয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে।
ওআরএস ব্যবহার: সঠিক নিয়মে ওআরএস তৈরি ও খাওয়ানো।
পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা: খাবারের আগে ও পরে এবং শিশুর মল পরিষ্কারের পর হাত ধোয়া।
বিশুদ্ধ খাবার পানি: শুধু ফিল্টার বা সেদ্ধ করা পানি খাওয়ানো।
বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা বলেন, “বাংলাদেশের ইপিআই কর্মসূচিতে রোটাভাইরাসের টিকা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এটি ডায়রিয়ার প্রকোপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
শীতকালীন ডায়রিয়ার প্রকোপ আরও এক মাস ধরে থাকতে পারে। সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই রোগের প্রকোপ কমানো সম্ভব।
প্রযুক্তি সহায়তায়: Star Web Host It
Leave a Reply